মহান রব্বুল ‘আলামীন বান্দার প্রতি অত্যন্ত মেহেরবান। বান্দার জন্য তাঁর রহমতের দ্বার সর্বদা উন্মুক্ত। তাঁর কাছে চাইলে তিনি খুশি হন, না চাইলে অসন্তুষ্ট হন। তাই তিনি নিজেই বান্দাকে শিখিয়েছেন যে, সে আল্লাহর কাছে কী চাবে, কীভাবে চাবে, কোন ভাষা ব্যবহার করবে? যার বিস্তারিত বিবরণ পবিত্র কুরআন ও হাদীসে রয়েছে। তা থেকে নির্বাচিত কিছু দু‘আ এখানে উল্লেখ করা হল।
দু‘আর শুরুতে যেহেতু হামদ (আল্লাহর প্রশংসা) ও সালাত (দুরূদ শরীফ) থাকা সুন্নাত তাই নমুনা স্বরূপ কয়েকটি হামদ ও সালাত উল্লেখ করা হল।
اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ، وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلٰى نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰ لِه وَصَحْبِه اَجْمَعِيْنَ
অর্থ: সকল প্রশংসা আল্লাহ পাকের জন্য, যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক এবং রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক রাসূলগণের সর্দারের উপর এবং তাঁর পরিবারবর্গ ও সকল সাথীগণের উপর।
سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِه سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ
অর্থ: আল্লাহর প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করছি। মহান আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
ফায়দা: উপরোক্ত কালিমা দু‘টি যবানে উচ্চারণ করতে সহজ, কিয়ামত দিবসে ওযনে ভারী, করুণাময় আল্লাহর নিকট প্রিয়। (বুখারী, হাদীস নং-৭৫৬৩)
سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ وَلَاۤ اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَاللهُ اَكْبَرُ
অর্থ: আমি আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি। সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য, তিনি ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই। তিনি সবচেয়ে বড়।
ফায়দা: (ক) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপরোক্ত ৪টি বাক্য সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় বাক্য চারটি, এর যে কোনোটি দিয়েই তুমি শুরু করো তাতে কোন অসুবিধা নেই। (সহীহ মুসলিম, হাদীস: ২১৩৭)
(খ) তিনি আরো ইরশাদ করেছেন, এই বাক্যগুলো আমার মুখে উচ্চারিত হওয়া সূর্য যে সমস্ত জিনিসের উপর উদিত হয়, সেই সমুদয় জিনিস অপেক্ষা অধিকতর প্রিয়। (অর্থাৎ দুনিয়ার সকল জিনিস অপেক্ষা এই বাক্যগুলো আমার মুখে উচ্চারিত হওয়া অধিকতর প্রিয়) (সহীহ মুসলিম, হাদীস: ৭০২২)
يَا رَبِّ لَكَ الْحَمْدُ كَمَا يَنْبَغِيْ لِجَلَالِ وَجْهِكَ وَلِعَظِيْمِ سُلْطَانِكَ
অর্থ: হে আমার প্রতিপালক! সমস্ত প্রশংসা একমাত্র তোমার জন্য, তোমার মহান সত্ত্বা এবং সুবিশাল রাজত্বের জন্য যেমন প্রশংসা উপযুক্ত। (ইবনে মাজাহ, হাদীস: ৩৮০১)
ফায়দা: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে, আল্লাহর কোনো এক বান্দা উপরোক্ত কালিমাগুলো পাঠ করলে দুইজন ফেরেশতা তার সওয়াব লেখা কঠিন মনে করে আল্লাহ তা‘আলার কাছে বলল, হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার এক বান্দা এই কালিমাগুলো পড়েছে, আমরা তার সওয়াব কীভাবে লিখব? আল্লাহ তা‘আলা বললেন, বান্দা যা বলেছে তাই লিখে রাখো, আমার সাথে সাক্ষাতের সময় আমি নিজে তার পুরস্কার দিব। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস: ৩৮০১)
(যা দ্বারা কয়েক ঘণ্টা একাধারে নফল ইবাদতের সওয়াব লাভ হয়) (সহীহ মুসলিম, হাদীস: ২৭২৬)
سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِه عَدَدَ خَلْقِه وَرِضَا نَفْسِه وَزِنَةَ عَرْشِه وَمِدَادَ كَلِمَاتِه
অর্থ: আল্লাহর প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করছি। তাঁর সৃষ্টির সংখ্যা পরিমাণ, তাঁর সন্তোষ পরিমাণ, তাঁর আরশের ওজন পরিমাণ এবং তাঁর গুণাবলীর কথা লেখার কালি পরিমাণ।
৫ নং হামদ
اَللهُ اَكْبَرُ كَبِيْرًا، وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ كَثِيْرًا، وَسُبْحَانَ اللهِ بُكْرَةً وَّ اَصِيْلًا.
অর্থ: আল্লাহ সব থেকে বড়, অতি মহান। সর্বাধিক ও সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। সকাল ও সন্ধ্যায় আমরা আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি।
ফযীলত: উক্ত হামদ পড়লে আকাশের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। (যা দু’আ করা হয় তাই কবুল হয়) (সহীহ মুসলিম, হাদীস: ৯৯)